চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে সারাদেশে
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলের বিপুল পরিমাণ জমিতে মরিচের চাষাবাদ হচ্ছে। এখানকার পলি মাটিতে এক মৌসুমেই প্রায় শত কোটি টাকার মরিচ উৎপাদন হয়। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে সারাদেশে। এতে অন্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে স্থানীয় চাষিরা।
যমুনা নদী বেষ্টিত সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার চরাঞ্চলের জমি এক সময় পতিত থাকতো। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরার্মশে কৃষকরা বেশ কয়েক বছর ধরে এসব জমিতে বাণিজ্যিকভাবে এখন মরিচ চাষাবাদ শুরু করেছেন। এ মৌসুমে মাঠে গেলেই দেখা মিলবে যমুনার বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল জুড়ে মরিচের খেত।
কৃষক-কৃষাণীরা দলবেধে জমি থেকে লাল, সবুজ মরিচ তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমি থেকে মরিচ তুলে এখানেই বস্তাবন্দি করা হচ্ছে। প্রতিদিন স্থানীয়সহ দূর দূরান্তের মরিচের পাইকাররা এখান থেকে টনকে টন মরিচ কিনে নদীপথে নিয়ে যাচ্ছেন আড়তে। সেখান থেকে জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে সারাদেশে। বন্যায় চরের জমিতে পলি পড়ায় এখানে মরিচের বাম্পার ফলন হয়।
গুটিয়ার চরের মরিচের পাইকারি মহাজন আমজাদ হোসেন জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে চরাঞ্চলের মাঠ থেকে কাঁচা-পাকা মরিচ কিনে আড়তে বিক্রি করেন। চরাঞ্চল থেকে মরিচ কিনে ঘোড়ার গাড়িতে করে নৌকা ঘাটে আনেন। এরপর নদীপথে সিরাজগঞ্জ আড়ত হয়ে সেই মরিচ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় সারাদেশের বাজারে।
পাইকারী, খুচরা মরিচ কেনার পাশাপাশি তিনি কৃষকদের জমির পুরো মরিচ খেত কিনে নেন। তারপর শ্রমিক দিয়ে মরিচ তুলে বিক্রি করেন। আবার জমি থেকে মরিচ পাকিয়ে শুকনো করেও বিক্রি করেন। এভাবে তিনি এই মৌসুমে প্রায় ২শ’ মন মরিচ কিনে বিক্রি করবেন। তার মতো চরাঞ্চলে অন্তত আরও ২০ জন মরিচের পাইকার আছে। তারাও একইভাবে মরিচ কিনি বিক্রি করেন। তবে তারা এবছর মরিচের ব্যবসায় তেমন একটা লাভ করতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ আনোয়ার সাদাত জানান, চরাঞ্চলের পতিত জমিতে মরিচসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদের আওতায় আনতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সব রকমের সহযোগিতা ও পরার্মশ দেয়া হচ্ছে। ফলে তারা চাষাবাদের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছেন। এ উপজেলার মেছড়া ও কাওয়াকোলা ইউনিয়ন মরিচ চাষবাদের জন্য জেলায় প্রসিদ্ধ।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, সিরাজগঞ্জ জেলায় চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৪শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষাবাদ হয়েছে। যেখান থেকে উৎপাদিত হবে ১২৩.৬৬ মে.টন মরিচ। যার বাজারমূল্যে প্রায় শত কোটি টাকা। যা চরাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করেছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।